লক্ষ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা আমরা কোন আপোষে পাইনি। পাইনি কারও দয়ায়। স্বাধীনতার লাল সূর্যটাকে ছিনিয়ে নিতে আমাদের পাড়ি দিতে হয়েছে এক দীর্ঘ রক্তস্নাত পথ। গভীর আত্মত্যাগ, সাহস ও বীরত্বের এক অভূতপূর্ব ইতিহাস রচিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে।
বাঙালির এই জন্মযুদ্ধে আমরা হারিয়েছি দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতা প্রদর্শন এবং আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ দেওয়া হয় বিভিন্ন মর্যাদা ও খেতাব।
আসুন জেনে নেই এই খেতাবগুলোর বিস্তারিতঃ
বীরশ্রেষ্ঠঃ স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পদক বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব। যুদ্ধক্ষেত্রে অতুলনীয় সাহস ও আত্মত্যাগের নিদর্শন স্থাপনকারী ৭ জন যোদ্ধাকে ত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক দেয়া হয়।
বীর উত্তমঃ বীর উত্তম খেতাবের দিক দিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বের পুরস্কার। স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতার সাথে যুদ্ধের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক দেয়া হয়। ৬৮ জন পায় এই বীর উত্তম খেতাব।
বীর বিক্রমঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানকারী ১৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে তাদের বিশেষ অবদানের ভিত্তিতে এই খেতাব দেওয়া হয়। তৃতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বের পুরস্কার এটি।
বীর প্রতীকঃ স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ উপাধি বীর প্রতীক। মোট ৪২৬ জনকে এই উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
বীরাঙ্গনাঃ মুক্তিযুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে নির্যাতিত নারীদের বীরাঙ্গনা উপাধি দেওয়া হয়। ২ থেকে ৪ লক্ষ নারী পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের দ্বারা নির্যাতিত হয়।
এছাড়াও রয়েছেন নাম না জানা ৩০ লক্ষেরও বেশি শহীদ। ১৯৭১ সালের বর্বর পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা রচনা করে পৃথিবীর জঘন্যতম গণহত্যার ইতিহাস। পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাঙালিকে জাতিকে শত বছর পিছিয়ে দিতে তারা হত্যা করে এই দেশের সূর্যসন্তান বুদ্ধিজীবীদের।
অনেক ত্যাগ ও রক্তের দামে কেনা এই স্বাধীনতার মূল্য রাখতে উত্তরপ্রজন্ম হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে আমাদেরই। সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।