নিউজরুম

চলমান নৌযান ধর্মঘটের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে পণ্য পরিবহন

By Admin

October 21, 2020

১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছে পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের খাদ্যভাতা, নদীতে কাজ করার সময়ে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষার পর্যাপ্ত সরঞ্জাম, নিয়োগপত্র, সার্ভিস বুক ও পরিচয়পত্রসহ বাংলাদেশ লাইটার ও নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে, শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন অব্যাহত রেখেছেন। 

ঢাকার মতিঝিল বিআইডব্লিউটিএ ভবনে গত সোমবার, বিকাল থেকে প্রায় রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত নৌযান মালিকদের পক্ষে বৈঠকে বসেছিলেন শ্রমিকরা। তবে দীর্ঘ এই আলোচনায় কোনো ধরণের কার্যকরী ফলাফল না আসায়, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী ধর্মঘট শুরু করা হয়। 

ধর্মঘট শুরুর প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পার হলেও মালিকপক্ষ দাবি না মানতে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। আর এদিকে ১১ দফা দাবিতে অনড় রয়েছেন নৌযান শ্রমিকরাও। ফলে তৈরি হয়েছে এক জটিল পরিস্থিতি। 

সারাদেশে প্রায় ৩ লক্ষ নৌযান শ্রমিক আছেন যারা কর্মবিরতি পালন করছেন। তাদের দেওয়া ১১ দফা ও ১৫ দফা দাবি না মানলে নৌযানের হুইল ঘুরতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে স্থানীয় নেতারা। 

এদিকে জানা গিয়েছে, আজ বুধবার বন্দর চ্যানেলের পশুর নদীতে প্রায় ৪০০ থেকে ৪৫০ লাইটারেজ জাহাজ অবস্থান করে নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। কর্মবিরতির একদম প্রথম থেকেই জাহাজের পাশ থেকে সব লাইটারেজ জাহাজ সরিয়ে এনে নদীতে নোঙর করে রাখা হয়েছে, যা সৃষ্টি করেছে অচলাবস্থা। বন্দরে সকাল নাগাদ প্রায় ১২টি বাণিজ্যিক বড় জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে দুপুরের পর ৫টি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করেছে ও পণ্যবোঝাই ১টি বিদেশি জাহাজ বন্দরে আগমনের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নৌযান শ্রমিকদের দেওয়া কর্মবিরতির ফলে প্রভাব পড়েছে এখানেও। তবে, বন্দর জেটি ও কন্টেইনার ইয়ার্ডে সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম চলছে। 

ধর্মঘট প্রসঙ্গে আশুগঞ্জ থেকে জানা গিয়েছে, পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি মঙ্গলবার সকাল থেকে এখানে শুরু হয়েছে। ফলে নৌবন্দরে তেলসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী অন্তত ৫০টি নৌযান আটকা পড়েছে এবং এসব জাহাজ থেকে পণ্য লোড ও আনলোড বন্ধ রয়েছে। 

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব আহসানুল হক চৌধুরী দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “একটি মাদার ভ্যাসেল যদি একদিন অলস বসে থাকে, তার মানে হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ হাজার ডলার বাড়তি খরচ। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় শুধু নয়, মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব চলমান এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হওয়া উচিত। 

চলমান এই পরিস্থিতি যত দ্রুত সমাধান হবে, দেশের পণ্য পরিবহনের জন্য তত মঙ্গলজনক। 

তথ্যসূত্রঃ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম।