বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শিগগিরই শুরু হচ্ছে না!
বন্দর নগরী চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল আলোচিত এই প্রকল্পটি নিয়ে নতুন করে আরও সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। ফলে এটির কাজ শেষ হতে আরও ১ বছরেরও বেশি সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বে-টার্মিনাল নির্মাণের বিষয়ে এ সময়ের মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করাও সম্ভব হবে না বলে জানা গিয়েছে।
আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করতে পূর্বের সমীক্ষাটি যথেষ্ট না হওয়ায় নতুন করে এই সমীক্ষা চালাতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গিয়েছে। প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণও এখনো শেষ হয়নি।
এদিকে, বন্দর ব্যবহারকারীরা বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন। বে-টার্মিনালটি নির্মাণের প্রস্তাব দিয়ে বিভিন্ন দেশের সাতটি প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন যে হারে বেড়েছে তাতে বর্তমান অবকাঠামো দিয়ে তা সামাল দেয়া সম্ভব নয়। তাই এই বে-টার্মিনাল নির্মাণের কোন বিকল্প নেই।
যে বিদেশি সাতটি প্রতিষ্ঠান বে-টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে তারা হল পোর্ট অব সিঙ্গাপুর অথরিটি (পিএসএ), সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড, সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে, ভারতের আদানি গ্রুপ, ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস, চীনের চায়না মার্চেন্টস গ্রুপ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই গ্রুপ।
বর্তমানে পণ্য খালাসের জন্য বন্দরে প্রতিটি জাহাজকে গড়ে ৭-৮ দিন এমনকি আরও বেশি সময় বসে থাকতে হয়। নতুন এই টার্মিনাল না হলে এ সমস্যা দিন দিন আরও প্রকট হওয়ার আশংকা আছে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও হালিশহর এলাকায় সাগর উপকূল ঘেঁষে এই বে-টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। একে বলা হচ্ছে আগামীর বন্দর। ৮৭১ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন ও সরকারি জমি ছাড়াও সমুদ্র থেকে জেগে উঠা আরও এক হাজার ৬০০ একরসহ দুই হাজার ৫০০ একর জমিতে টার্মিনালটি নির্মাণের কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবকাঠামোর চেয়ে প্রায় পাঁচগুণ বড় হবে নতুন এই বে-টার্মিনাল। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবকাঠামো ৪৫০ একর জমির ওপর নির্মিত। বর্তমানে এ বন্দরে সাড়ে ৯ মিটার গভীরতা ও ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে বড় জাহাজ প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু নতুন এই টার্মিনাল হলে তাতে ভিড়তে পারবে ১২ মিটার গভীরতা ও ২৮০ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্যরে জাহাজ।
ফলে বন্দরে প্রতি বছর যে পরিমাণ আমদানি-রফতানি পণ্য হ্যান্ডলিং হচ্ছে, বে-টার্মিনালে হ্যান্ডলিং হবে তার চেয়ে পাঁচগুণ বেশি পণ্য।
সমীক্ষা চালানো হচ্ছে আবার নতুন করে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে বন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, তখন পিপিপি ও জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ করা হবে- এমন সিদ্ধান্ত ছিল না। এ সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করতে নতুন করে এই সমীক্ষা চালাতে হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে সমীক্ষা শেষ হলে দ্রুত বে-টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ হবে।
তথ্যসূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর