প্রথমবারের মতো সরকার পার্কিং নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এই উদ্দেশ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) নীতিমালার একটি খসড়া তৈরি করেছে ।
এই খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী বেসরকারি সংস্থাও সরকারের পাশাপাশি পার্কিং ব্যবস্থাপনা করতে পারবে। রাস্তার উপর পার্কিং যা অন-স্ট্রিট পার্কিং হিসেবে পরিচিত তা এই নীতিমালায় যোগ হয়েছে। নীতিমালায় চিহ্নিত স্থান ব্যতিত গাড়ি পার্কিংয়ে কঠোর আইন প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে । এছাড়াও, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন পার্কিং ফি নির্ধারণ করা হবে।
নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে অত্যাধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির প্রয়োগ থাকবে পার্কিং ব্যবস্থাপনায়। এই খসড়ায় ‘পার্কিং এনফোর্সমেন্ট সেল’ তৈরির কথাও উল্লেখ রয়েছে।
রাজধানী ঢাকায় নিয়ন্ত্রনহীনভাবে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি ও যত্রতত্র পার্কিং নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডিটিসিএ’র এক কর্মকর্তা। তিনি এটিকে যানজট ও দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। খন্দকার রাকিবুর রহমান, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) বলেন, ‘পার্কিং নীতিমালার খসড়া করার পর আমরা এখন সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিচ্ছি। মতামত সমন্বয় করে আমরা একটি চূড়ান্ত খসড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। এরপর এটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমবারের মতো এই নীতিমালাটি হচ্ছে। এক সময় ঢাকায় তেমন গাড়িই ছিল না। তখন হয়তো এই ধরণের নীতিমালার কোন প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এখন ঢাকায় গাড়ির সংখ্যা অনেক। ফলে গাড়ি রাখার জন্য যানজট হচ্ছে সবখানে। তাই গাড়ি কোথায় রাখা হবে, কীভাবে ম্যানেজ করা হবে- সবকিছু পার্কিং পলিসির আওতায় হবে।’
আলোচনায় আরো জানানো হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রাজউক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অধিভুক্ত এলাকার জন্য জরিপের মাধ্যমে পার্কিংয়ের প্রয়োজন অনুযায়ী জায়গা চিহ্নিত করে ডিটিসিএ-র কাছ থেকে অনুমতি নিবে। এছাড়াও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থাও করা হবে।
হাসপাতাল, আবাসিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, রেল স্টেশন, প্রশাসনিক এলাকা, কারখানা, পিকনিক স্পট, স্টেডিয়াম, পার্ক, এয়ারপোর্ট, লঞ্চঘাট, টার্মিনাল ইত্যাদি স্থানে পার্কিংয়ের জন্য ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বিল্ডিং কোড অনুযায়ী যথেষ্ট পরিমাণ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পার্কিং লট তৈরিতে মাল্টিস্টোরেড, সমতল ও আন্ডার গ্রাউন্ড- এ তিন ধরণের ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে হবে।
আরও জানা যায় ট্রাক, বাস, কাভার্ড ভ্যান, লরি, ওয়াটার ট্যাঙ্কার ইত্যাদি বাণিজ্যিক পরিবহনের জন্য পার্কিং ফি দিয়ে নির্ধারিত সড়কে রাত্রিকালীন পার্কিংয়ের অনুমতি পাওয়া যেতে পারে। সাইকেল, রিকশা, ভ্যান, জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহৃত যানবাহন ইত্যাদির ক্ষেত্রে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চিহ্নিত স্থানে পার্কিং করা যাবে।
তথ্যসূত্রঃ জাগো নিউজ২৪.কম