দেশের পণ্য পরিবহনে ট্রাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পালন করছে আর ট্রাক ভাড়ার প্রক্রিয়া ডিজিটাল হওয়ার ব্যবসায়ীরা কাজ করতে পারছেন আরও সহজে।
গেল বছর ২০১৯ সালে মোট খালি ও পণ্যবাহী কনটেইনার পরিবহন হয়েছে ২৮ লাখ ৯০ হাজার। এর মধ্যে দেশের সড়কপথে ২৭ লাখ ৬১ হাজার ৬২৮টি কনটেইনার পরিবহন হয়েছে, যা মোট কনটেইনারের ৯৫ শতাংশ। এছাড়াও বছরজুড়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে পরিবহন হয়েছে নানা ধরণের পণ্য।
আমাদের রেলপথে ৯৫ হাজার ৩৭২টি কনটেইনার আনা-নেওয়া হয়েছে ঢাকার কমলাপুর ডিপো ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে। এই সংখ্যা মোট কনটেইনারের মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়াও নৌপথে বন্দর থেকে ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের পানগাঁও নৌ টার্মিনালে আনা-নেওয়া হয়েছে ২৭ হাজার ৪৭৭টি কনটেইনার।
সংখ্যাগুলো দেখলেই বোঝা যাচ্ছে ট্রাক দেশের পণ্য পরিবহনে কত বড় ভূমিকা পালন করছে। দেশের আমদানি-রপ্তানিকারক ও বিদেশি ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্যবাহী ও খালি কনটেইনার পরিবহনে সড়ক, রেল ও নৌপথের যেকোন একটি নির্বাচিত হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, কোন পথে পণ্য পরিবহন হবে, তা পছন্দ করার ক্ষেত্রে প্রধানত পণ্য পরিবহনের সময়টাই প্রাধান্য পেয়ে থাকে। সেই সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টিও বিবেচনা করা হয়।
আরও জানা যায়, সড়কপথে এখন দিনে দিনেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পণ্য আনা-নেওয়া করা সম্ভব। দেশের অন্যান্য স্থানের ক্ষেত্রেও একই সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে রেলপথে সড়কের চেয়ে বেশি সময় লাগে, আর নৌপথে তো অনেক বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। সেজন্য কনটেইনার পরিবহনে সড়কপথেই ব্যবসায়ীদের ঝোঁক বেশি। আর সড়কপথে সবচেয়ে কার্যকরী যান হচ্ছে ট্রাক।
নৌপথে পণ্য পরিবহন সম্পর্কে জানতে চাইলে বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি ও এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “নৌপথে এখনো খরচ বেশি পড়ে। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময়ের অনিশ্চয়তা। কারণ, পানগাঁও-চট্টগ্রাম রুটে প্রতিদিন জাহাজ চলে না।”
দেশের বৃহত্তম চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, এই বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পণ্যের ৭০ শতাংশই ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে যায়। বন্দরে জাহাজ থেকে নামানোর পর এসব পণ্যের সিংহভাগ বন্দর বা ডিপো থেকে কনটেইনার খুলে কাভার্ড ভ্যান বা ট্রাকে করে সারা দেশে নেওয়া হয়। আশা করা যাচ্ছে চলতি বছরে পণ্য পরিবহনে সড়কপথ আরও শক্ত ভূমিকা পালন করবে।
তথ্যসূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো