কক্সবাজারের মহেশখালীতে অবস্থিত “মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর” এর উন্নয়ন প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা তৈরির কার্যক্রম গত সোমবার, ১৬ই নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
আগামী ৬ বছরের মধ্যে জাহাজ ভেড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে প্রথম ধাপের কাজ শুরু করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জনাব, এস এম আবুল কালাম আজাদ গত সোমবার সাংবাদিক ও শীর্ষস্থানীয় গনমাধ্যমকে জানান, “দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের এই প্রকল্পের নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান জাপানের নিপ্পন কোয়েইর সঙ্গে গত ২৩ সেপ্টেম্বর চুক্তি সই হয়েছিল। আজ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে প্রথম সভার মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো।
মাতারাড়ীতে চট্টগ্রাম বন্দরের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার মত। ‘মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু হলেও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে এটা আসলে গভীর সমুদ্রবন্দরই হতে চলেছে। কেননা ১৪ মিটার গভীরতার জাহাজ যে বন্দরে ভিড়তে পারে, সেটাকেই গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে ধরা হয়।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে ১৮ মিটার গভীরতার জাহাজও ভিড়তে পারবে। ২০২৬ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তার আগে অর্থাৎ ২০২৫ সালের মধ্যেই কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আমাদের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে। এছাড়াও বন্দরের নকশা জাপানি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে করা হচ্ছে। চলমান এই প্রকল্পের অধীনে সংযোগ সড়কসহ গভীর সমুদ্র বন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দীর্ঘ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এর ফলে বিশাল জাহাজ থেকে সরাসরি পণ্য ওঠানামা সহজ হবে।
মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্দর সদস্য (প্রশাসন) জনাব, মো. জাফর আলম বলেন, গভীর সমুদ্র বন্দরটিতে বেশ বড় জাহাজ ভেড়ানো যাবে। ফলে ৮ – ১০ হাজার কনটেইনার পরিবহনের উপযোগী বড় জাহাজ ভেড়ানো যাবে এই বন্দরে। এছাড়াও, সাধারণ পণ্যবাহী ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতার জাহাজও ভেড়ানো যাবে খুব সহজেই।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জানান, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ ছিল সময়ের দাবি। এ বন্দর তৈরির ফলে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যে অর্থনৈতিক বেল্ট গড়ে উঠছে, তা আরও বেগবান হবে।
তথ্যসূত্রঃ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম।